Posts

Showing posts from May, 2020

সুখধাম

#সুখধাম দুটো ছোট স্পিডব্রেকার ছেড়ে গেট পেরোতে গিয়ে নীল রঙের ফিয়াট এভেঞ্চুরাতে কষে ব্রেক ধরলো অয়ন সান্যাল। বুড়ো লোকটা তাড়াতাড়ি সামনে থেকে সরতে গিয়ে পড়ে গেছে।   ঝাঁকুনিতে হাতের এন্ড্রয়েড পড়ে যাওয়ায় সামনের সিটে স্ত্রী বিদিতা তেঁতে উঠলো। পিছনে জার্মান শেফার্ডটাও ঘেউ ঘেউ করে উঠল ।   -- দেখতেও পায় না নাকি ?! হাউ ডিসগাস্টিং ! ভীষণ ব্যস্ততা থাকায় গত মাসে আর সময় হয়নি আসার। গতকাল বিকেলে একটা কল পাওয়ায় আসা ... " হ্যালো .. অয়নবাবু বলছেন ? সুখধাম বৃদ্ধাশ্রম থেকে বলছি। আপনার মা অরুনিমা দেবী খুব অসুস্থ। সম্ভব হলে একবার আসবেন। "

বিসর্জন

# বিসর্জন -- চা ঠাণ্ডা  অইগেলো ঠাকুরজ্যেঠা , তাড়াতাড়ি আও । শশব্যস্ত জয়া এই নিয়ে দ্বিতীয়বার তলব করল নিতাইকে । ঘুম থেকে  ও ঠার পর  সব খুঁটিনাটি কাজ সারার ফাঁকে বাপ আর ঠাকুরজ্যেঠাকে চা করে দেওয়াটা তার অনেকদিনের অভ্যাস। হাঁস দুটোকে খাঁচাছাড়া করার পর ঘর ঝাড়ু দেওয়া, এঁটো বাসনপত্র পরিষ্কার করা, উঠোন ঝাঁট, স্নান, ফুল তোলা, ঠাকুর দেওয়ার পর নিজে একটু লাল চা দিয়ে গলা ভেজায়। মহালয়ার সকালে তর্পণ সেরে বাড়ি ফেরার পরেই তক্তপোশের নিচে থেকে জং ধরা ট্রাঙ্কটি খুলে এক এক করে সব নথিপত্র দেখছিল নিতাই.. একটাই আশা, সৌভাগ্যক্রমে যদি স্বদেশী হওয়ার কোনো প্রমাণপত্র পাওয়া যায়! অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজি করার পরেও কোনো কিছু না পেয়ে নিরাশায় দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে। মা মারা যাওয়ার বছরখানেক আগে যে বন্যা এসেছিলো, তাতেই বোধহয় সব ভেসে গেছে! ট্রাঙ্কটিকে খোলা রেখেই দুই হাঁটুতে ভর করে সোজা হয়। গত কয়েকদিনের একটানা পরিশ্রমে কোমর ধরে গেছে। চা খেয়ে এই মরশুমে শেষবারের মতো আবার কাজে বসতে হবে। প্রতি বৎসরই তর্পণ সেরে এসে মায়ের চোখে শেষ তুলির টান দেয় নিতাই। তারপর নিজের হাতে গড়া মৃন্ময়ী মায়ের চরণে শ্রদ্ধা-ভক্তি ...